Home - PageNavi (show/hide)

hide

Breaking News

#মধু কি সত্যিই জমে? #honey

মধু কি সত্যিই জমে? খাঁটি মধু জমে নাকি ভেজাল মধু? মধুতে তলানি পড়লে সেইটা কি ভেজাল মধু নাকি খাঁটি মধু? কোন ফুলের মধু জমে আর কোন ফুলের মধু জমে না? মধু ফ্রিজে রাখলে জমে নাকি বাইরে? ইত্যাদি।

এরকম কত শত যে প্রশ্ন আমাকে শুনতে হয় তার কোনো ইয়েত্তা নাই। আমি নিজেই একসময় বিশ্বাস করতাম যে খাঁটি মধু কখনোই জমে না। আর যদি জমে যায় তাহলে সেইটা ভেজাল মধু। কিন্তু এখন দেখি বাস্তবতা সম্পূর্ণই ভিন্ন। মধু নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে যা দেখলাম তা সত্যিই বিস্ময়কর ব্যাপার। আসলে মধু সম্পর্কে আমাদের মাঝে যে তথ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে তা অধিকাংশই ভুল আর কুসংস্কর।

অনেক ভুল আর কুসংস্করের মদ্ধে একটি অন্যতম কুসংস্করের হচ্ছে, অনেকেই মনে করেন যে খাঁটি মধু কখনোই জমে না। যদি জমে তাহলে ভেজাল মধু। যাইহোক, এখন আমরা বিজ্ঞানের আলোকে নিরপেক্ষ ভাবে একটু যাচাই করবো আসলেই কি খাঁটি মধু জমে না? আর ভেজাল মধু জমে যায়?

নিচের বৈজ্ঞানিক তথ্য দেখার আগে আরও দুইটা ব্লগ পোস্ট পড়ে আসতে পারেন এই জমা মধু নিয়েঃ
১/ (ভিডিও সহ) খাঁটি মধু কি জমে যায়? – মধু বিক্রেতা আলামিন
২/ (ভিডিও সহ) খাঁটি মধু চেনার উপায়ঃ ফ্রিজিং পরীক্ষার সঠিক তথ্য

মধু জমে যায় কেন?

মধু ক্রেতারা মধুর জমাকে ভুল বোঝেন। তারা একে ভেজাল মনে করেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে মধু জমে যাওয়া একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। তরল থেকে দানাদার অর্ধ-কঠিন অবস্থায় যাওয়ার এ প্রক্রিয়াকে গ্র্যানুলেশন (granulation) বা কঠিন বাংলায় স্ফটিকায়ন বলে। মৌচাক থেকে আলাদা করার পর মধু যত দ্রুত জমে, চাকের ভেতর মোমের কোষে থাকলে তত দ্রুত জমে না। প্রতিটি মধুর স্ফটিকায়নের একটা নির্দিষ্ট সময় আছে। ওই সময়ের মধ্যে মধু যদি না জমে তবে সম্ভাবনা আছে যে ওই মধুতে ভেজাল আছে।
জমে যাওয়ায় মধুর রং বদলে যায়, তরল থেকে দানাদার হয়ে যায় কিন্তু মধুর গুণগত মান কমে না।





মোটা দাগে বলতে গেলে মধু হলো একটি ঘন শর্করা দ্রবণ। সাধারণত এতে ৭০% এর বেশি শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট ও ২০% এর কম পানি থাকে। তার মানে স্বাভাবিকভাবে পানিতে যে পরিমাণ চিনি দ্রবীভূত হয়, মধুতে তার চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে থাকে। চিনির মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণ দ্রবণকে অস্থিতিশীল করে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা এমনভাবে প্রকৃতিকে সৃষ্টি করেছেন যে সে ভারসাম্য রক্ষা করতে চায়। একারণেই মধুর জমাট বাধা শুরু হয়। পানি থেকে গ্লুকোজ আলাদা হয়। গ্লুকোজ স্ফটিক আকারে জমতে থাকে। আর দ্রবণটি আস্তে আস্তে সাম্যাবস্থার দিকে যায়। এখন প্রশ্ন আসতে পারে, একই সময়ে কেনা দুটো মধুর মধ্যে একটা মধু জমে যাচ্ছে, আরেকটা যাচ্ছে না কেন?
মধুর শর্করাতে প্রধানত প্রধান অণু থাকে – গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ।


গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজের পরিমাণ একেক মধুতে একেকরকম থাকে। সাধারণভাবে ফ্রুক্টোজ ৩০-৪৪% এবং গ্লুকোজ থাকে ২৫-৪০%। বিভিন্নজাতের মধু বিভিন্ন হারে স্ফটিকায়িত হয়। এ হার ১-২ মাস থেকে ২ বছর হতে পারে।
গ্লুকোজের দ্রবণীয়তা কম, এটি স্ফটিকায়ন হয় দ্রুত। যে মধুতে গ্লুকোজ বেশি জমে তাড়াতাড়ি (সরিষা ফুলের মধু)। যে মধুতে গ্লুকোজ কম এবং পানি বেশি সেটা জমে ধীরে ধীরে (সুন্দরবনের মধু)।
কিছু মধু পুরোপুরি পুরোপুরি জমে যায় (সরিষা ফুলের মধু)। আবার কিছু মধুতে নিচে স্ফটিক আর উপরে তরলের একটি স্তর থাকে। মধুর প্রকারের ভিত্তিতে স্ফটিকের আকারও বিভিন্ন রকম হয়। মধু যত দ্রুত স্ফটিকায়িত হয়, স্ফটিক তত পাতলা হয়।
স্ফটিকায়িত মধুর রঙ তুলনামূলকভাবে মলিন হয়।
এছাড়া আরো কিছু নিয়ামক রয়েছে যা স্ফটিকায়ন শুরু করা, তরান্বিত করা ও স্লথ করায় ভূমিকা রাখে। গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ ছাড়া মধুর অন্যান্য কার্বোহাইড্রেট উপাদান, এমাইনো এসিড, প্রোটিন, খনিজ, এসিড ইত্যাদিও স্ফটিকায়নের প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করে। এছাড়া ধুলা, পরাগরেণু, মোমের কণা বা বহিরাগত স্ফটিকের উপস্থিতিতেও স্ফটিকায়ন তরান্বিত হতে পারে।





তাপমাত্রা, আপেক্ষিক আর্দ্রতা ও প্যাকেটজাত করার ধরণও পার্থক্য গড়ে দিতে পারে। মধুর ধরনের উপর ভিত্তি করে কক্ষ তাপমাত্রায় স্ফটিকায়ন শুরু হতে কয়েক সপ্তাহ, কয়েক মাস এবং বিরল ক্ষেত্রে কয়েক দিন লাগতে পারে। অনেকের জমা মধু খেতে ভালো লাগে। এক চামচ স্ফটিকায়িত মধু তরল মধুতে যোগ করলে বাকি মধু দ্রুত জমে যাবে। সংকলিত পোস্ট
সোর্সঃ http://modhupedia.shorobor.org

কোন মন্তব্য নেই